সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ , ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাছ বাজারে প্রতারণার ফাঁদে ক্রেতারা বালুপাথর মহালের ইজারা বন্ধ নয়, ইজারা প্রথার বাতিল চাই ১১ মাসে অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, ৫ পর্যটককে কারাদন্ড মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালিত “মধ্যনগরে রাজহংস হাউজ বোট বিএনপি নেতার দখলে” শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ কাদাজলে নষ্ট ভাটির বন্দরের সুনাম সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার চোরাকারবারিদের কোনো ছাড় নয় : বিজিবি অধিনায়ক টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র : অবহেলায় ধ্বংসের পথে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদারবাজারে সুপেয় পানি ও শৌচাগার সংকট ‘৩১ দফা’ বাস্তবায়নে বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ শান্তিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা আবারও ছাতক সীমান্তে ২০ জনকে পুশইন পৌর শহরে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের আহ্বান গাঁজার চালানসহ মাদক কারবারি হেলাল আটক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার, বন্দুক, পাইপগান, গুলিসহ গ্রেফতার ৪ শান্তিগঞ্জে সিএনজি ও প্রাইভেট কার সংঘর্ষে আহত ৫

শাহপরান মাজারে সংঘর্ষ, আহত ২০

  • আপলোড সময় : ১১-০৯-২০২৪ ০৩:৫৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৯-২০২৪ ০৩:৫৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
শাহপরান মাজারে সংঘর্ষ, আহত ২০
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: সিলেটের হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারে তিন দিনব্যাপী ওরসের শেষ দিনে স্থানীয় জনতা ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওরসপন্থি ব্যক্তি-ফকিরদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ফজরের সময় পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার শাহপরান (রহ.)-এর মাজারে তিন দিনব্যাপী ওরস শুরু হয়। ওরস শুরুর আগের দিন শুক্রবার জুমার নামাজের পর গানবাজনার আড়ালে মাজারে মাদক সেবন ও অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলে এসব বন্ধের দাবিতে মাজারগেটের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন একদল মুসল্লি। বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় মাজারের খাদেম সৈয়দ কাবুল আহমদ মাজারে গানবাজনা বন্ধের ঘোষণা দেন। এ অবস্থায় ওরস চলাকালে কেউ যেন মাজারে গানবাজনা চালাতে না পারেন, সে জন্য শুরু থেকেই মাজার কর্তৃপক্ষ, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় আলেম-ওলামা কড়া নজর রাখেন। সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে আখেরি মোনাজাত শেষে শিরনি বিতরণের মধ্য দিয়ে ওরস শেষ হওয়ার কথা ছিল। রাত ৩টার দিকে কয়েকশ ব্যক্তি মাজারে এসে কেন গানবাজনা নিষিদ্ধ হলো, এ নিয়ে ক্ষোভ জানান। বিক্ষোভকারী কিছু ব্যক্তির হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। এ সময় মাজারে থাকা মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের তর্কাতর্কি হয়। ওই ব্যক্তিরা তখন মাদ্রাসার কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে মারধর করেন এবং ফকির ও তাদের হয়ে একটি পক্ষ মাজারের ভেতরে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আটকে রেখেছেন, এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ উত্তেজনার সূত্র ধরেই পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী, মাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকাসহ সিলেট সদর উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আলেম-ওলামা ও স্থানীয় লোকজন মাজারে আসেন। এ সময় অনেকের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। পরে মাজারপন্থিদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় ইটপাটকেলের আঘাতে মাজারের খাদেমের কক্ষের কাচ ভেঙে যায় এবং দানবাক্স লুটপাট হয়। সংঘর্ষ চলাকালে ওরস উপলক্ষে তৈরি করা পাগল-ফকিরদের তাঁবু-আস্তানা ভেঙে ফেলা হয়। তাড়িয়ে দেওয়া হয় মাজারে থাকা ফকিরদের। অনেক ফকির দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বেশ কয়েকজন পিটুনির শিকার হন। ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওরসে আসা মাদকসেবী ব্যক্তিরাই পরিস্থিতি অশান্ত করতে উচ্ছৃঙ্খলতা করেছে। পরে ওই মহল অতর্কিতভাবে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে আটকে রাখে। অন্যদিকে ফকিরদের অভিযোগ, গানবাজনা বন্ধের নামে ওরস উপলক্ষে মাজারে আসা ফকিরদের কোনও কারণ ছাড়াই কিছু ব্যক্তি শুরু থেকেই নানাভাবে হেনস্তা ও অপমান করছিলেন। ওরসের শেষ দিন সংঘর্ষ হলে তাদের মারধরও করা হয়। শাহপরান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনুপ কুমার চৌধুরী বলেন, বর্তমানে শাহপরান মাজার এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। সোমবার রাতের ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। মাজারের খাদেম সৈয়দ কাবুল আহমদ বলেন, প্রায় ৭০০ বছর ধরে শাহপরান মাজারে ওরস পালিত হচ্ছে। একইভাবে প্রতি বৃহ¯পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেও মাজারে গানবাজনা হতো। তবে অতীতে ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে গানবাজনা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এর সুস্থ পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে গেছে। এখন গানবাজনার আড়ালে মাদক ব্যবসা, নাচ ইত্যাদি ঢুকে পড়ায় মাজারে গানবাজনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। সোমবার ওরসের শেষ সময়ে এসে তৃতীয় পক্ষ মাজারের মাইক কেড়ে নিয়ে ‘গানবাজনা হবেই, কেউ আটকাতে পারবে না, ঠেকাতে পারবে না’ বলে ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণা দিয়ে ওই মহল ফকির-পাগলদের উসকে দেয়। ওই পক্ষ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধরও করে। তবে মাজারের খাদেমরা তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসেন। এ খবর পেয়ে আশপাশের মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও জনতা ছুটে আসেন। এরপরই সংঘর্ষ হয়। এদিকে শাহপরান মাজারে পাহারায় থাকা মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আলেম-ওলামা ও জনতার ওপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ এনে মাজারগেটে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ‘অসামাজিক ও অনৈসলামিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির’ ব্যানারে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় এ কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ জনতা, আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, মাজারে বার্ষিক ওরস চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। যতুটুক জেনেছি ওরসকে কেন্দ্র করে যাতে অসামাজিক কোনো কার্যক্রম না হয়, সেজন্য স্থানীয় ছাত্র-জনতা প্রতিদিনই নজরদারি করছিল। সেই ধারাবাহিকতায় নজরদারি চলাকালে একদল লোক কোনও কারণ ছাড়াই মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারীদের শনাক্তের জন্য কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স